ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা অব্যাহত আছে। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার ভারত সরকার জানিয়েছে, পাকিস্তানি বিমান আর ঢুকতে পারবে না ভারতের আকাশসীমায়। সামরিক বিমান তো বটেই, পাকিস্তান রেজিস্টার্ড, পরিচালিত বা লিজ নেওয়া বাণিজ্যিক বিমানগুলির জন্যও ভারতের দরজা আপাতত বন্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এক নোটিশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে পাকিস্তান ভারতীয় এয়ারলাইনগুলোর জন্য নিজেদের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেই সঙ্গে তৃতীয় দেশের মাধ্যমেও সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং ভারতীয় নাগরিকদের জন্য বিশেষ দক্ষিণ এশীয় ভিসা স্থগিত করা হয়।
তবে পাল্টাপাল্টি এমন পদক্ষেপের ঘোষণার আগে থেকেই উভয় দেশ এক অপরের আকাশসীমা এড়াতে শুরু করে বলে প্রতিবেশী দেশ দুটির সংবাদমাধ্যমের খবর।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এ সিদ্ধান্তের ফলে মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে যেতে পাকিস্তানের উড়োজাহাজের অনেকটা বেশি পথ পাড়ি দিতে হবে। চীন ও শ্রীলঙ্কার ওপর দিয়ে যেতে হবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও ওশিয়ানিয়ার দেশগুলোতে যেতে।
এতদিন এসব গন্তব্যে যেতে সাধারণত পাকিস্তানের উড়োজাহাজ ভারতের ওপর দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। সেই পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের এয়ারলাইন্সগুলোর ব্যয় বাড়বে, সময়ও বেশি লাগবে।
অপরদিকে পাকিস্তান আকাশসীমা বন্ধ করায় ভারতের অনেক উড়োজাহাজকেও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। পাড়ি দিতে হচ্ছে বড় পথ।
পহেলগাম হামলার পর গত এক সপ্তাহ ধরে পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলার জন্য ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানকে দায়ী না করলেও তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, কূটনীতিক বহিষ্কার ও সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের মতো বেশ কয়েকটি কঠোর পদক্ষেপ নেয়।
পাল্টা জবাব হিসেবে ভারতের জন্য নিজেদের স্থল ও আকাশসীমা বন্ধসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তানও। এই আবহেই গত মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পাকিস্তান হামলার জন্য ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়েছেন বলে খবরে বলা হয়েছে।
কাশ্মীর অঞ্চলে সম্প্রতি পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত দাবি করেছে, হামলাকারীদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি নাগরিক এবং তারা ‘সন্ত্রাসী’। অন্যদিকে, ইসলামাবাদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়।
এই ঘটনায় দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নিয়েছে। এমনকি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দীর্ঘদিনের ‘সিন্ধু পানি চুক্তি’ও সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।